বর্তমান কতৃর্ত্ববাদী সরকারের আমলে নাগরিকদের বাক, বিবেক, চিন্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি বা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সমালোচনাকারীসহ সরকারের বিরুদ্ধে যায় এমন যে কোন তথ্য প্রকাশের ফলশ্রুতিতে নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কার্টুনিস্ট, লেখক, সাংবাদিক, ফটোগ্রাফার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতা, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নাগরিকদের হয়রানীমূলকভাবে গ্রেফতার করে জনাকীর্ণ করাগারে আটক রাখা হচ্ছে, যেখানে চিকিসা সুবিধা নেই বললেই চলে। এছাড়াও অনেককে নির্যাতন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ প্রবর্তনের পর থেকে সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মতপ্রকাশের কারণে ২০২১ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ২০২ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারীর শুরুতে সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনা ও কার্টুন প্রকাশ করার কারণে ২০২০ সালের ৪ মে লেখক মুশতাক আহমেদ ও কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে র্যাব-৩ এর সদস্য পরিচয় দিয়ে একদল ব্যক্তি তাঁদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় এবং আটকের বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করে। পরে তাঁদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয় এবং আটকের পর তাঁদের ওপর নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পরবর্তীতে মুশতাক আহমেদ ছয়বার জামিনের আবেদন করলেও আদালত তাঁর জামিন আবেদন নাকচ করে দেয় এবং তাঁকে প্রায় ৯ মাস কারাগারে আটক রাখা হয়। এই অবস্থায় কারাগারে বন্দি থাকা মুশতাক আহমেদের মৃত্যু ঘটে। নির্যাতনের কারণে গুরুতর অসুস্থ হলেও কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে এখনও বন্দি রাখা হয়েছে।
অধিকার যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর জন্য দায়ি ব্যক্তিদের বিচার এবং অবিলম্বে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরসহ মুশতাকের মৃত্যুর প্রতিবাদ করতে গিয়ে যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন তাঁদের মুক্তির দাবি জানাচ্ছে। এছাড়া অধিকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল নির্বতনমূলক আইন বাতিলের দাবি জানাচ্ছে।