রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যের হাতে নির্যাতন ও লাঞ্ছনার শিকার হয়ে এক নারী আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) বিকেলে ওই নারীর মরদেহ নিয়ে গেছেন স্বজনরা। এর আগে মঙ্গলবার রাতে ওই নারীকে গাছে বেঁধে মারধর করা হয়। বুধবার সকালে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেন তিনি।
নিহত আক্তারুন নেছা (৩৮) বড় বিহানালী ইউনিয়নের বাগান্না গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামীর বাড়ি কুষ্টিয়ায়। এ ঘটনায় উপজেলার বড় বিহানালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল মজিদসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ক্ষেতের ফসল নষ্ট হওয়ার অভিযোগ তুলে আক্তারুন নেছাকে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে পিটিয়েছেন ইউপি সদস্য আবদুল মজিদ। তবে তাদের মধ্যে আগে থেকেই ব্যক্তিগত বিরোধ ছিল। ব্যক্তিগত বিরোধের জের ধরে ওই নারীকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এই ক্ষোভে ও লজ্জায় বিষপানে আত্মহত্যা করেন তিনি।
পুলিশ জানায়, আক্তারুনের সঙ্গে মজিদের বিরোধ বহুদিনের। মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় ফসল নষ্টের অভিযোগে ওই নারীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাকে রশি দিয়ে বেঁধে একটি গাছের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন চালানো হয়েছে। খবর পেয়ে রাতে স্থানীয় ইউপির চেয়ারম্যান মাহমুদুর রহমান গ্রাম পুলিশ সদস্যদের নিয়ে আক্তারুনকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে আক্তারুন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আক্তারুন স্থানীয় বাঘাবাড়ি বাজারের একটি দোকান থেকে কীটনাশক কিনে তা পান করেন। এতে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন দ্রুত তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মারা যান তিনি।
আক্তারুনের ভাই সাইফুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আমার বোনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা ছাড়াও লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এই ক্ষোভ ও লজ্জায় বোন বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।
বাগমারা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ময়নাতদন্তের পর ওই নারীর মরদেহ নিয়ে গেছেন স্বজনরা। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় ইউপি সদস্য আবদুল মজিদের ভাই আবদুল করিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার বাকি আসামিরা পলাতক। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।