বিদেশে পাঠানোর কথা বলে ৫২ জনের কাছ থেকে ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীরা প্রায় সবাই নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা। এ অভিযোগে প্রতারণার শিকার রেহানা বেগম বাদি হয়ে সোমবার রাতে ৩ প্রতারককে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তবে রহস্যজনক কারণে মঙ্গলবার পর্যন্ত ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ অভিযোগটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করেনি। উপরন্তু ফতুল্লা মডেল থানার ওসি আসলাম হোসেন মঙ্গলবার বিকেলে এ প্রতিবেদককে বলেছেন এ ধরণের কোন ঘটনাই তার জানা নেই। কেউ এ ধরণের অভিযোগ দিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রেহানা দুদকের কাছেও অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তরা হলো, রাজধানী কাকরাইল এলাকার শরীফ এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধীকারী মোহাম্মদ আলী ওরফে রাজু, ফতুল্লার বক্তাবলী পূর্বগোপালনগর এলাকার মাহাবুল, শরীফ এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার আবু তাহের প্রধান।
প্রতারণার শিকার হয়ে ভুক্তভোগী রেহানার পরিবার সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। তার মাধ্যমে আরও যারা ওই রিক্রুটিং এজেন্সিতে পাসপোর্ট ও টাকা জমা দিয়েছেন তারা রেহানার বাড়িতে টাকা ও পাসপোর্টের জন্য ভীড় করছেন।
ভুক্তভোগী রেহানা বেগম জানান, তার প্রবাসী ভাইয়ের সঙ্গে রাজু নামের এক ব্যক্তির বিদেশে পরিচয় হয়। রাজুর রাজধানী কাকরাইলে শরীফ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছে। এক পর্যায়ে রাজুসহ অপর প্রতারক চক্র রেহানাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য লোক জোগাড় করতে বলে। তাদের কথা মতো রেহানা জাপানে যাওয়ার জন্য তার পাসপোর্ট জমা দেয়। পর্যায়ক্রমে ওই চক্রের হাতে ৫২টি পাসপোর্টের বিপরীতে রাজুগংদের হাতে ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা তুলে দেন তিনি। ওই টাকার বিপরীতে তাকে ৮৪ লাখ টাকার একটি রশিদ দেওয়া হয় রিক্রুটিং এজেন্সির পক্ষ থেকে।
প্রতারিত ৫২ জনের অনেকের ফিঙ্গার প্রিন্টও নেওয়া হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল ভিসা এবং বিমানের টিকেটও। কিন্তু সেই ভিসাগুলো পরবর্তীতে জাল প্রমাণিত হয়। আর এরপরই টনক নড়ে রেহানাসহ অন্যদের। এ নিয়ে রাজুসহ তার সহযোগীদের কাছে টাকা ফেরত দিতে বললে তারা টালবাহানা শুরু করে।
রেহানা আরো জানায়, তাদের দেওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় প্রতারক চক্রটি তাদেরকে সাজানো মামলায় আসামী করেছে। অপরদিকে যারা রেহানাকে বিশ্বাস করে বিদেশে যেতে রিক্রুটিং এজেন্সিতে টাকা দিয়েছেন তারাও টাকার জন্য রেহানাকে ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করছে। তবে প্রতারণার শিকার বেশির ভাগই তার আত্মীয় স্বজন বলে তিনি জানান।
এদিকে গত ১৮ জানুয়ারী টাকা ফেরত চাইতে আসামী মাহাবুলের বাড়িতে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে সে তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছে বলে রেহানা অভিযোগ করেন।
প্রতারিত হওয়ার পর তিনি দুদুকেও এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে। পরে গত সোমবার রাতে তিনি বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে দুদকের সহকারী পরিদর্শক আল আমিন বলেন, প্রতারনার অভিযোগ এনে রেহানা নামের এক নারী একটি অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগটি তদন্ত করা হচ্ছে।