তিনি দেশের ক্রিকেটের সফলতম অধিনায়ক। তার নেতৃত্বেই ওয়ানডে দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ। টাইগাররা সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে ম্যাচও জিতেছে মাশরাফির ক্যাপ্টেন্সিতে। অধিনায়ক মাশরাফির ঈর্ষণীয় সাফল্য আছে বিপিএলেও। এই টুর্নামেন্টে সর্বাধিক চারবারের চ্যাম্পিয়ন টিমের ক্যাপ্টেন তিনি।
এর আগে মাত্র দুইবার শেষ হাসি হাসা সম্ভব হয়নি। ২০১৬ সালে চতুর্থ আসরে কুমিল্লার হয়ে আর গত আসরে রংপুর রাইডার্সের নেতৃত্ব দিয়েই শুধু চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি মাশরাফি। এবার নিয়ে পারলেন না তৃতীয়বার।
শিরোপা জেতা বহুদূরে, এবার ফাইনাল খেলাই হলো না। এলিমিনেটর ম্যাচেই বিদায় নিলো মাশরাফির ঢাকা প্লাটুন। অবশ্য এ ম্যাচের জয়-পরাজয় ছাপিয়ে তার তালু ফাটা অবস্থায় ১৪ সেলাই নিয়ে খেলতে নামাই দিন শেষে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
তবে বিপিএল থেকে বিদায়ের দিনে সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফিকে কথা বলতে হলো তার জাতীয় দল থেকে অবসর নেয়া নিয়ে। এমনিতে খুব মিডিয়া ফ্রেন্ডলি। সাংবাদিকদের সাথে সখ্য বেশ। প্রাণ খুলে আড্ডা দিতেও পছন্দ করেন। তবে কেন যেন সেই মাশরাফিকে গত দুদিন বিশেষ করে আজ সোমবার একটু অস্থির মনে হলো।
হতে পারে ভেতরে কোন আক্ষেপ, হতাশা বা অসন্তোষ আছে। আগের দিন বলেছেন, ‘আমার কোনো অভিমান-টভিমান নেই।’ তবে আজ কথা শুনে মনে হলো মাশরাফির ভেতরে রাজ্যের অভিমান।
জাতীয় দলে খেলা, অধিনায়কত্ব এবং ঘটা করে বিদায়- সব নিয়েই কেন যেন একটা চাপা ক্ষোভ আছে তার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তার মুখায়ব, কথোপকথন আর শরীরী অভিব্যক্তিতে বারবার ফুটে উঠলো।
জাতীয় দলে খেলা চালিয়ে যাওয়া প্রসঙ্গ উঠতেই মাশরাফির সেই অভিমানী সংলাপ, ‘আমার তো মনে হয় না আমি বলেছি যে, জাতীয় দলে খেলা চালিয়ে যাব না। আমি খেলতে চাই , তা পরিষ্কার করেই বলেছি। আগের দিনও পরিষ্কার করে বলেছি যে, আমি ঢাকা লিগ খেলব। বিপিএল আছে, বিপিএল খেলব। আমি খেলাটা উপভোগ করছি, খেলছি। জাতীয় দল বা অন্য কোথায়, সেটা যে যেভাবে দেখছে।’
এটুকু বলে উল্টো প্রশ্নকর্তার কাছে জানতে চান, ‘আপনি বলেন, এখানে যে ৭০-৮০ জন ক্রিকেটার খেলছে, তারা কি সবাই জাতীয় দলের আশা করে খেলছে? অবশ্যই না। তারপরও তো তারা খেলাটা খেলে যাচ্ছে।’
তাই বলে যে এখন অবসরে যাবেন না, এমনটাও বললেন না মাশরাফি। তার কথায়, ‘বাংলাদেশে অনেক খেলোয়াড় আছে যারা মাঠ থেকে অবসরে যায়নি। আমার থেকেও বড় খেলোয়াড় আছে। হাবিবুল বাশার সুমন তো বাংলাদেশের হয়ে ক্রাইসিস মোমেন্টে সব সময় রান করেছে। তিনিও মাঠের থেকে অবসরে যায়নি। সুজন ভাই হয়তো পেরেছেন। এটা বিরল ঘটনা। একটা সময় হয়তো ভাবতাম যে মাঠ থেকে রিটায়ার্ড করবো। দেখা যাক। এখন মনে হচ্ছে প্রয়োজন নেই।’