সুদানের একটি আদালত সোমবার দেশটির ২৭ জন গোয়েন্দা এজেন্টকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। চলতি বছরের শুরুতে সুদানের দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক ওমর আল বশিরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সময় গোয়েন্দা হেফাজতে নিয়ে এক শিক্ষককে হত্যার দায়ে তাদের এই দণ্ড দেয়া দিয়েছেন আদালত।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালীন আহমেদ আল-খায়ের নামের ওই শিক্ষককে হেফাজতে নিয়ে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ওইসব গোয়েন্দা এজেন্টকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক সাদক আবদেল রহমান
বিচারক বলেছেন, সুদানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কাসসালাতে গত জানুয়ারির শেষে ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করার পর মারধর ও নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়। ২৭ জনের মৃত্যুদণ্ড ছাড়াও ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আরও চার গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ছাড়া পেয়েছেন সাতজন।
আহমেদ আল-খায়েরের পরিবারকে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা প্রথমে জানিয়েছিল বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার কিছুদিন পর এক তদন্তে বেরিয়ে আসে ওই শিক্ষক প্রচন্ড মারধর ও নির্যাতনে মৃত্যু হয় তার। আলজাজিরা বলছে, ঐতিহাসিক এই রায় দেশটিকে গণতন্তের চর্চার পথ তৈরি করে দিল।
ওমুদুরমান আদালতে সোমবার এই রায় ঘোষণার সময় আদালতের বাইরে শত শত মানুষ সমাবেশ করে। তাদের মধ্যে অনেকে জাতীয় পতাকা এবং অন্যরা আহমেদ আল-খায়েরর ছবি নিয়ে দোষীদের মৃত্যুদণ্ড দেয়া নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। এপ্রিলে ওমর আল-বশিরের পতনের পরে এই রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন দেশটির মানুষ।
উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বিক্ষোভ শুরু হয়। রুটির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হলেও পরে তা স্বৈরশাসক ওমর আল-বশিরের পদত্যাগের দাবিতে সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়। বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়েন ওমর আল-বশির।
তবে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে বশির ক্ষমতা ছাড়লেও সুদানের বিক্ষুব্ধ মানুষ পথ ছাড়েনি। বিক্ষোভের জেরে গত আগস্টে সামরিক ও বেসামরিক মিলিয়ে দেশটির ক্ষমতা ভাগাভাগি প্রশ্নে একটি অন্তর্বর্তী কাউন্সিল গঠিত হয়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের হিসাবে সুদানের বিক্ষোভে অন্তত ১৭৭ জন নিহত হয়েছেন।