ফতুল্লায় ছাগল চুরির অভিযোগে দুই যুবককে অমানবিক নির্যাতনের মামলার প্রধান আসামী বিতর্কিত আওয়ামীলীগ নেতা আলাউদ্দিন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের একটি টিম শুক্রবার ভোররাত ৪টার দিকে ঢাকার ওয়ারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আলাউদ্দিন হাওলাদার কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৫নং নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামলীগের সভাপতি ও একই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য।
এদিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের নাটকীয়তায় বিকালেই আদালত থেকে জামিন পায় আলাউদ্দিন হাওলাদার। শুক্রবার বিকালে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: আফতাবুজ্জামানের আদালতে তার জামিন শুনানী হয়। এরআগে পুলিশের তৎপরতায় মামলার বাদী নাজমা বেগম আদালতে আসামী আলাউদ্দিন হাওলাদারের পক্ষে হলফনামা দাখিল করেন। এসময় নাজমা বেগম আদালতকে বলেন, আসামী জামিনে গেলে তার কোন আপত্তি নেই। পরে শুনানী শেষে আদালত আসামী আলাউদ্দিন হাওলাদারের জামিন মঞ্জুর করেন।
অভিযোগ রয়েছে, আসামীর পক্ষ নিয়ে পুলিশ মামলার বাদী নাজমা বেগমকে ‘ম্যানেজ’ করে। এবং ঢাকার ওয়ারী থেকে আলাউদ্দিন হালাদারকে নিয়ে আসে পুলিশ। সবকিছু ঠিকঠাক করে দ্রুত তাকে আদালতে পাঠায়। এবং অল্প সময়ের মধ্যে তার জামিনও হয়ে যায়। তবে এজন্য আলাউদ্দিন হাওলাদারকে মোটা অংকের টাকা খরচ করতে হয়েছে।
ফতুল্লা থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, এসআই সালেকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আলাউদ্দিন হাওলাদারকে শুক্রবার ভোররাত ৪টার দিকে ঢাকার ওয়ারী থেকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ফতুল্লার কুতুবপুর ইউনিয়নের মুসলিমপাড়া এলাকার আব্দুর রব মাস্টারের ছেলে নাঈম (২৫) ও একই এলাকার রাতুল (৩০) নামে দুই যুবককে ছাগল চোর আখ্যা দিয়ে ধরে নেয়া হয় কুতুবপুরে আলাউদ্দিন হালাদারের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে। সেখানে দুই যুবককে মধ্যযুগীয় কায়দায় পেটানোর পর পুলিশের সোপর্দ করা হয়। ৯ জানুয়ারি নির্যাতনের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এবং গণমাধ্যমে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তোলপাড় শুরু হয় এলাকায়। এক পর্যায়ে ১০ জানুয়ারি রাতে নির্যাতনের শিকার নাঈমের মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় আলাউদ্দিন মেম্বারকে প্রধান আসামি করে ৫জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পর থেকে গা-ঢাকা দেয় আলাউদ্দিন মেম্বার। পরে ১১ জানুয়ারি পুলিশ মামলার ৩ ও ৪ নাম্বার আসামী রবিন ও ইউনুছকে গ্রেপ্তার করে। বাকী দুই আসামী জিহাদ ও গ্রিল স্বপন পলাতক।