নীলফামারী (বাংলা ২৪ বিডি নিউজ) : নীলফামারীর তিস্তা নদীতে অভিযান চালিয়ে ছোটবড় ১৫ টি নৌকা ও সাতটি স্যালো মেশিন জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ও পুলিশ। অভিযানে নেতৃত্ব দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডিমলা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) মিল্টন চন্দ্র রায়। এসময় যৌথ অভিযানে বিজিবি-৭ ব্যাটালিয়ানের রবীনগর ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মোবাশ্বেও খান, থানাহাট কলোনী ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার আলী ও ডিমলা থানার উপপরিদর্শক আতিকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বিজিবি-৭ ব্যাটালিয়নের নবীনগর বিওপি ক্যাম্পের সুবেদার মোবাশ্বের খান বলেন, আইন অমান্য করে তিস্তা নদী থেকে ভারী মেশিন ব্যবহার করে পাথর উত্তোলন করছে একটি চক্র। ফলে পরিবেশ বিপর্যয়সহ নদীর গতি পরিবর্তন হচ্ছে।
এমন অভিযোগে শনিবার দিনব্যাপী নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট ও ডিমলা উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) নেতৃত্বে বিজিবি-পুলিশ সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠন করে ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে তিস্তা নদীর বার্ণির ঘাট এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে স্যালো মেশিন চালিত ছোটবড় ১৫ নৌকা, পাথর উত্তোলনের বিভিন্ন যন্ত্রপানি জব্দ করা হয়। সন্ধ্যায় নদীর বার্ণিরঘাট এলাকায় জব্দকরা ১৫টি নৌকার সাতটি ইঞ্জিন ভেঙ্গে ও আগুন দিয়ে ধ্বংস করা হয়। এসময় আটক হওয়া ২৪জন পাথর শ্রমিককে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিল্টন চন্দ্র রায় বলেন, ২০১০ সালের বালু মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে ৪এর ছ ধারায় পাথর উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত নৌকা ও ইঞ্জিন ধ্বংস করা হয়েছে। জব্দ করা সাত নৌকার মধ্যে চার মালিকে সনাক্ত করা গেছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হবে।
অভিযোগ মতে, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় তিস্তা নদী থেকে ভারী মেশিন ব্যবহার করে অবৈধ পাথর উত্তোলন করে আসছিল একটি চক্র। এতে নদীর গতি পরিবর্তন হয়ে চলতি বর্ষায় টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নের চার গ্রামের দুই হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি, প্রাথমিক মাধ্যমিক পর্যায়ের ৮টি দ্যিালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়। সম্প্রতি হুমকীর মধ্যে পড়েছে ওই ইউনিয়ে অবস্থিত চড়খড়িবাড়ি বিজিবি ক্যাম্প।
চড়খড়িবাড়ি বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার নিজাম উদ্দীন বলেন, নদীর গতি পরিবর্তন হয়ে গত চার দিন ধরে ক্যাম্পের ভেতর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ক্যাম্পের যাবতীয় কার্যক্রম আনন্দ বাজার নামক স্থানে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অবৈধ পাথর উতোলনের কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে।
এদিকে নদীতে অবৈধ পাথর উত্তোলনের জন্য নদীর গতি পরিবর্তন ও ভাঙন সৃষ্টি হওয়ার কথা স্বীকার করে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চড়খড়িবাড়ি এবং পূর্বখড়িবাড়ি মৌজায় ভাঙন রোধে জরুরী বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।