সাতক্ষীরার কলারোয়ায় উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের অবমাননার অভিযোগে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান বর্জন করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়ে সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা ও গেরিলা কমান্ডার আব্দুল গফফার আনুষ্ঠানিকভাবে এ অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দেন।
এজন্য কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে দায়ী করে মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, উপজেলা প্রশাসন সোমবার বিজয় দিবসের দিনে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছেন। এজন্য কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানাই।
গেরিলা কমান্ডার আব্দুল গফফার বলেন, কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম শাহনেওয়াজ বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে আমাদের দাওয়াত দেননি। মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করায় আমরা বিজয় দিবসের সব কর্মসূচি বর্জন করলাম।
তিনি বলেন, উপজেলার সব মুক্তিযোদ্ধার সিদ্ধান্ত মোতাবেক উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারকে সংবর্ধনাসহ সব কর্মসূচি বর্জনের সিদ্ধান্ত হয়। সিদ্ধান্ত মতে আমরা অনুষ্ঠান বর্জন করলাম।
কলারোয়া উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে কলারোয়া উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে। সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হিসেবে সেখানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হলে উপস্থিত হই। বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে বিভিন্ন কমিটি, উপ-কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে উপজেলা প্রশাসন আমাকে একটি কমিটির সদস্য হিসেবে রাখে।
তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে উপজেলার সব মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা উৎসব পালন করেন। এই দিনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জীবিত মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। এছাড়া তোপধ্বনি, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের কবরে পুষ্পমাল্য প্রদান, আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আলোচনাসভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাদের প্রতিনিধিদের রাখা হয় ও দাওয়াত দেয়া হয়। অথচ এবার উপজেলা প্রশাসন নিজেদের বসার জন্য উন্নতমানের ব্যবস্থা করলেও মুক্তিযোদ্ধাদের বসার ব্যবস্থা করেছে মাঠের একপাশে, দাওয়াতও দেয়া হয়নি আমাদের। যা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অশ্রদ্ধা এবং অপমান। পতাকা উত্তোলনসহ দাওয়াত না দিয়ে বিজয় উৎসব থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বঞ্চিত করেছেন ইউএনও। এজন্য অনুষ্ঠান বর্জন করেছি। একই সঙ্গে ইউএনওকে প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।
তবে মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে কলারোয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম শাহনেওয়াজ বলেন, গত বছরও যেভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের দাওয়াত করা হয়েছিল এ বছরও একইভাবে দাওয়াত করা হয়েছে। তবে কেন তারা এমনটা করলেন বিষয়টি আমি বুঝতে পারছি না।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ আমি নিজেও তাদের কাছে গিয়ে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের অনুরোধ করেছি। তবুও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেননি তারা। এখানে রাজনৈতিক গ্রুপিং রয়েছে। একটি পক্ষ তাদের ইন্দন দিয়ে এসব করিয়েছে। আমি নিজেও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। মুক্তিযোদ্ধারা অসম্মানিত হোক সেটা আমি চাই না। তারা যেসব অভিযোগে অনুষ্ঠান বয়কটসহ আমাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সেটি ভিত্তিহীন।