অপরিণামদর্শী অমানুষের হাতেই প্রাচ্যের রানি খ্যাত চট্টগ্রামের সৌন্দর্য লুণ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, দুর্বৃত্তরা পাহাড়, নদী, খাল গোগ্রাসে গিলে খেয়ে এ নগরকে হতশ্রী করেছে।যারা এসব অপকর্ম করেছে তাদের চিনি, অনেকের ভূমিকা রক্ষক হয়ে ভক্ষকের মতোই। তাই আমার স্বপ্ন ছিলো সুযোগ পেলেই চট্টগ্রামের হারানো সৌন্দর্য পুনরুদ্ধার করবো।
তিনি বলেন, যখন মেয়র পদে দায়িত্ব গ্রহণ করি তখনই আমার স্বপ্ন বাস্তবায়ন শুরু। এ চট্টগ্রামকে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ নগরে পরিণত করে সৌন্দর্যবর্ধনই আমার প্রধান ব্রত হয়ে দাঁড়ালো। কিন্তু কাজটা অত সহজ ছিলো না, পদে পদে বাধা এবং সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে প্রাচ্যের রানির যেটুকু সৌন্দর্য ফিরে এসেছে তাতেও আমি পরিতৃপ্ত নই।
সৌন্দর্যবর্ধনের বেশ কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে, অনেক বাস্তবায়নের পথে। বলতে দ্বিধা নেই, এ নগর তিলোত্তমা হবে-এটা শুধু স্বপ্ন নয়, বাস্তবে ধরা দেবে। তবে এর জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন চট্টগ্রামের উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ।
শুক্রবার (১৭ জুলাই) দুপুরে আউটার স্টেডিয়ামে সার্কিট হাউস থেকে নেভাল অ্যাভিনিউ পর্যন্ত সৌন্দর্যবর্ধন ও মুক্তমঞ্চ তৈরির কাজ পরিদর্শনকালে মেয়র এসব কথা বলেন।
তিনি চট্টগ্রামের সৌন্দর্যবর্ধনে চসিকের পদক্ষেপ ও কর্মপন্থা তুলে ধরে বলেন, যেসব ফুটপাত ও খালি জায়গাগুলো আবর্জনার ভাগাড় ছিলে সেগুলোকে পরিচ্ছন্ন করে সবুজায়নের কাজের সিংহভাগই শেষ হয়েছে। নগরের প্রধান প্রধান সড়কের দুইপাশ ও আইল্যান্ড রকমারি বৃক্ষরাজিতে শোভিত করা হয়েছে। দেয়ালে শিল্পিত ছোঁয়ায় ম্যুরাল প্রকৃতি, বিপ্লব-দ্রোহের খণ্ড চিত্র এবং কৃতী বাঙালির প্রতিকৃতি নগরবাসীর আকর্ষণের কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সার্কিট হাউস থেকে নেভাল অ্যাভিনিউ, এমএ আজিজ স্টেডিয়াম ও আউটার স্টেডিয়ামজুড়ে ফুটপাতকে দৃষ্টিনন্দন ওয়াকওয়ে ও একটি মুক্তমঞ্চ নির্মাণের কাজ ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া এই বর্ষা মৌসুমে নগরের সব ওয়ার্ডে ৫০ লাখ ফলদ, বনজ ও ওষুধি গাছের চারা রোণ করা হবে।
তিনি নগরবাসীর উদ্দেশে বলেন, পরিবেশগত ভারসাম্য ও ঘরে বাইরে পরিচ্ছন্নতা, সবুজায়ন, পরিবেশগত ভারসাম্য ও সজীব রাখে এবং রোগ বালাই-মুসিবতের আশঙ্কা দূর করে। করোনাকালে এ উপলব্ধি বিশেষভাবে প্রণিধান যোগ্য। আর জনসচেতনতাই ঝুঁকিমুক্ত জীবন ধারার প্রধান উপজীব্য বোধশক্তি।
পরিদর্শনকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে নগরের সৌন্দর্যবর্ধন কাজে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, পরিবেশবিদ, বেলাল আহমেদ, মামুনুর রশীদ মামুন, আনিসুর রহমান, মোশাররফ হোসেন লিটন, খায়রুল আব্বাস চৌধুরী, মো. সুলতান, মঈন উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।