নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ঠিকাদার, বিএনপি নেতাসহ ১৭ জনকে আসামী করে আদালতে মামলার আবেদন করেছেন যুবলীগ নেতা নিয়াজুল ইসলাম খান। সোমবার (২১ ডিসেম্বর) বিকালে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহামিদা খাতুনের আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানাকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ২২ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানীর দিন ধার্য্য করেন আদালত।
মামলার আবেদনে সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর সমর্থকদের সঙ্গে হকারদের সংঘর্ষের সময় হত্যার উদ্দেশ্যে যুবলীগ নেতা নিয়াজুল ইসলাম খানকে মারধর, ২ লাখ টাকা ও ১ ভরি স্বর্ণ লুটের অভিযোগ আনা হয়।
মামলার আসামীরা হলো-নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াত আইভীর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত নাসিকের ঠিকাদার আবু সুফিয়ান, কামরুল হুদা বাবু, মোতালিব, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতা অসিত বরন, আওয়ামীলীগ নেতা কবির হোসাইন, বিএনপি নেতা হান্নান সরকার, মেয়র আইভীর ছোটভাই আহমদ আলী রেজা উজ্জল, ভাগিনা মিনহাজুল কাদির মিমন, সাংবাদিক মাসুম, আওয়ামীলীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, যুবদল নেতা সরকার আলম, আমিরুল ইসলাম, হাজী নেওয়াজ, সৈকত মেম্বার, ফারুক ও লিপু।
প্রসঙ্গত ২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারী শহরে হকারদের সঙ্গে মেয়র আইভী সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সেদিন নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে যাওয়ার পথে শহরের সায়েম প্লাজার সামনে ব্যবসায়ী নিয়াজুল ইসলামের উপর হামলা করে অভিযুক্ত আসামীরা। রাস্তায় ফেলে তাকে এলোপাথারী মারধর করা হয়। এতে সে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে তার কাছ থেকে লাইন্সেন করা পিস্তুল ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরে সেটা পরিত্যাক্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়। ওই ঘটনার পরদিন ১৭ জানুয়ারি মেয়র আইভীর ভাই ও সমর্থকসহ ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় অস্ত্র ছিনতাই ও হত্যাচেষ্টার লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন নিয়াজুল ইসলাম। অভিযোগটি নিয়াজুলের ভাই থানায় নিয়ে যায়। কিন্তু থানায় ঢুকে তাকে মারধর করে হামলাকারীরা। তবে, পুলিশ তখন নিয়াজুলের অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ না করে জিডি হিসেবে লিপিবদ্ধ করেছিলো। এছাড়া ওই সময় নাসিকের আইনকর্মকর্তা বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দেন। কিন্তু নারায়ণগঞ্জ মডেল থানা কারো মামলা রেকর্ড না করে পুলিশ বাদী হয়ে উভয়ের লোকজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে।
এদিকে বিষয়টি মিমাংশার জন্য আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে তৎপরতা থাকলেও আকষ্মিকভাবে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমানকে হুকমের আসামী করে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাদের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার মামলা করেন নাসিক। ফলে নিরুপায় হয়ে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন যুবলীগ নেতা নিয়াজুল ইসলাম।