নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেছেন, সব জায়গাতেই দুই নম্বরে ভরে গেছে। দুই নম্বরের ঠেলায় এখন আর এক নম্বররা সামনে আসতে পারে না। আমি মাঝে মধ্যে হতাশ হয়ে যাই। ভন্ডরা রাজনীতিতে এসে বড় বড় কথ বলে। সত্য কথা বলার সাহস না থাকলে রাজনীতি করার দরকার নেই। যাত্রা করা উচিৎ। জন সমর্থন ছাড়া সন্ত্রাসী করা যায় কিন্তু রাজনীতি করা যায়না।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে আমি অরজিনাল মুক্তিযোদ্ধা দেখি, হাঁটতে পারে না, চলতে পারে না। ঘরে খাওয়া নাই। আর যারা মুক্তিযোদ্ধার পর বেনিফেট নিয়েছে তারা ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলায়।
শুক্রবার বিকেলে ফতুল্লার বক্তাবলীর কানাইনগর এলাকায় ‘বক্তাবলী গণহত্যা দিবস’র আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, অরজিনাল মুক্তিযোদ্ধারা কোনো সময় নিজের নাম বেঁচে না। আমার বাবা, আমার ভাই সবাই মুক্তিযোদ্ধা। আজকে আমারও শহীদ পরিবার হওয়ার কথা। কিন্তু লাকিলি আমরা শহীদ পরিবার সন্তান না অথবা আনলাকিলি।
‘চতুর্থদিকে শকুনরা আকাশে উড়তেছে’ মন্তব্য করে সাংসদ বলেন, আমার কাছে কেন জানি মনে হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসে খুব কঠিন একটা সময় আসছে। সব চেয়ে কঠিন সময়। এই সময় ছোবল মারার চেষ্টা হবে। ওয়ান বুলেট, ওয়ান টার্গেট। আর সেটা হচ্ছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া একটা সম্পদ শেখ হাসিনা।
তিনি আরো বলেন, দেশে মহা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র হলো জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনাকে হটানোর ষড়যন্ত্র। আমি বেঁচে না থাকলে কিছু হবে না কিন্তু নেত্রী না থাকলে অনেক সনস্যা হবে। প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচাতে হবে।
‘আমি মরে গেলে কিছু আসবে যাবে না। হয়তো কেউ দু চারদিন কাঁদবে, কেউ আবার খুশিই হবে’ উল্লেখ করে শামীম ওসমান বলেন, আমি গভীর ভাবে চিন্তা করি, রাতের বেলা উঠে নামাজ পড়ি উনার জন্য। যে, এই মহিলার (প্রধানমন্ত্রী) যদি কিছু হয়ে যায়! বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে দেশ ৫০ বছর পিছায়ে গেছে। আজকে আমাদের প্রতিযোগিতা থাকার কথা সিঙ্গাপুর মালয়েশিয়ার উপরে, জাপানির সঙ্গে। সেখানে আমরা কোথায় চলে গিয়েছিলাম?
তিনি বলেন, কত বড় ঈমানদার জাতি আমরা। যে লোকটা সারাজীবন সংগ্রাম করে দেশটা স্বাধীন করলো, সে লোকটাকে একরাতে সবাইকেসহ মেরে ফেললাম! আমরাইতো মারছি। বাইরের লোকতো এসে মারে নাই। পাকিন্তান সাহস পায় নাই মারতে। আমরা বাঙালিরাই মারলাম। তার পুরো বংশ নির্বংশ করে ফেললাম। দুুটি মেয়ে দেশের বাইরে ছিলেন তাই বেঁচে গেছেন। আমি তাকে (শেখ হাসিনা) ভালোবাসি কেবল আওয়ামী লীগের নেত্রী হিসেবে না। আমি কয়দিন রাজনীতি করবো, এমপিগিরি করবো আমি নিজেও জানি না। আমি স্বাধীনচেতা মানুষ। রাজনীতি করতে আসছি, ধান্ধা করতে আসি নাই।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাহিদা বারিক, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল, শওকত আলী, ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন প্রমূখ।