সরস্বতী পূজার দিন ঢাকার দুই সিটিতে ভোটের তারিখ পরবির্তনের দাবি জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা নিয়ে গড়ে ওঠা সামাজিক সংগঠন সম্প্রীতি বাংলাদেশ।
শনিবার সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সদস্য-সচিব ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলসহ ৫৩ জনের স্বাক্ষর সংবলিত এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘৩০ জানুয়ারি ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের দিন নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ওইদিনই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সরস্বতী পূজা। পূজার দিন ভোটের তারিখ নির্ধারণ করার বিষয়ে নানা মহল থেকে আপত্তি উঠেছে। পূজা উদযাপিত হয়ে থাকে এরকম প্রতিষ্ঠানে ৭৩টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু), জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছেন। আমরণ অনশন করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশে ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠানের কারণে নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের নজিরও রয়েছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়টি এবার আদালতেও গড়িয়েছে।’
‘গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে রাজনৈতিক দল, প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোও নমনীয়। কাজেই নির্বাচনের তারিখ পুনর্নির্ধারণ করলে কোনো রাজনৈতিক সংকট দেখা দেবে না। বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক সমাজ ব্যবস্থার প্রতি সম্মান দেখিয়ে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বসে একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে আমরা মনে করি। নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। আমরা আশা করব, এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং সরস্বতী পূজা ভিন্ন ভিন্ন দিনে যাতে অনুষ্ঠিত হয় সেই ব্যাপারে পনর্বিবেচনা করবে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সম্প্রীতি বাংলাদেশ ধর্মীয় মূল্যবোধের বিষয়ে সর্বদা শ্রদ্ধাশীল। সব ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, আচারাদি যথাযথভাবে পালনে এবং উৎসব উদযাপনে সবার অংশগ্রহণকে সম্প্রীতি বাংলাদেশ সর্বোচ্চ পর্যায়ে উৎসাহ দিয়ে থাকে। বাঙালির শত সহস্র বৎসরের চিরায়ত সংস্কৃতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশের প্রতিও সম্প্রীতি বাংলাদেশ গভীর শ্রদ্ধা রাখে।
বিবৃতিতে বাকি স্বাক্ষরদাতারা হলেন
শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, প্রফেসর আ. মান্নান, শুদ্দ্বানন্দ মহাথেরো, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, মাহফুজা খানম, ড. আ স ম আরেফিন সিদ্দিক, শফিকুর রহমান (এমপি), বিচারপতি সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ড. আতিউর রহমান, প্রফেসর কামরুল হাসান খান, রামেনদু মজুমদার, খাইরুল মজিদ মাহমুদ, অ্যারোমা দত্ত (এমপি), মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলি শিকদার, মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) জন গোমেজ, প্রফেসর ডা. উত্তম বড়ুয়া, এ কে এম আতিকুর রহমান, মাওলানা মিজবাউর রহমান, হারুন হাবিব, ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, ড. মোহম্মদ সামাদ, প্রফেসর আ ব ম ফারুক, ক্যাপ্টেন আকরাম বীর উত্তম, ক্যাপ্টেন শাহাবুদ্দিন আহমেদ বীর উত্তম, ড. অসীম সরকার, শরীফ সাহাবুদ্দিন, মমতাজ উদ্দিন পাটোয়ারী, ডা. নুজহাত চৌধুরী, আলি হাবীব, কর্নেল (অব.) সি কে দাস, ড. সাজেদুল আওয়াল, ড. আর এম দেবনাথ, ড. সৌমিত্র শেখর, জাহিদুল হাসান পিন্টু, ড. মিলটন বিশ্বাস, আফরোজা জামিল (কংকা), প্রমোদ দত্ত, আনন্দ জামান, মো. বেলাল হোসেইন, প্রফেসর ডা. মো. মাহবুবুর রহমান, হেলাল উদ্দিন, উইলিয়াম প্রলয় সমাদ্দার, প্রণব সাহা, ডা. সুনান বিন ইসলাম, কুদ্দুস আফ্রাদ, রহমান মুস্তাফিজ, মিহির কান্তি ঘোষাল, রেজা সেলিম, ড. বিমান বড়ুয়া, রেভারেন্ড মার্টিন অধিকারী, মাসুদ মহিউদ্দিন।