জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর সভাপতি আসম আবদুর রব বলেছেন, ‘আদৌ এটা স্বাধীন দেশ কিনা আমার সন্দেহ হয়। ২৫ টাকার পেঁয়াজ ২৫০ টাকা, মেয়েরা ঘর থেকে বের হতে পারে না, বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ২৩ বা ২৪ ভাগ। ১০ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ৮ বার। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকে চাঁদা না দিলে ওয়ার্ডের কোনো মানুষের পক্ষে বাস করা সম্ভব নয়। প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টর্চারসেল আছে। এটা একটা মগের মুল্লুক হয়ে গেছে, জাহন্নাম হয়ে গেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর আলী আহম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার মিলনায়তনে জেএসডি নারায়ণগঞ্জ মহানগরের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলনকারী এই নেতা আরও বলেন, এদের কোনো দায় দায়িত্ব নেই। রাষ্ট্রে জনগণ ভোট দিলে সেই নির্বাচিত সরকারের দায়িত্ব থাকে। এদের তো আপনারা ভোট দিতে পারেননি। এরা তো ভোট চোর, ডাকাত। আগে শ্লোগান দিতাম, যায় যাবে তো জান, দেবো না গোলার ধান। এখন শ্লোগান দেই, যায় যাবে তো জান, মানবো নাতো সরকারের অন্যায় আবদার, অত্যাচার, নির্যাতন গুম, খুন। পৃথিবীর কোথাও এমন দৃষ্টান্ত নাই যে ৩০ তারিখে ভোট, কিন্তু ২৯ তারিখে ডাকাতি হয়। তাও দিনের ভোট রাতে ডাকাতি হয়। তোমাদের ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নাই। মানুষ তোমাদের উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘একটি দেশ যেভাবে নিঃস্ব হচ্ছে তাতে এই সরকারের ক্ষমতায় থাকা কোনোভাবেই শোভা পায় না। ব্যাংক লুট, ঋণগ্রস্থ জাতি, দূষণে পূর্ণ নগরী, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও নিরাপত্তা শূন্যের কোটায় আর চাঁদাবাজদের আস্ফালন। সত্যিকার অর্থে শেখ হাসিনা এখন আর দেশের ক্ষমতায় নেই, তাকে অন্য কেউ পরিচালিত করছে। কিন্তু কে করছে আমরা তা জানি না।’
তিনি বলেন, অভিযানের নামে ওয়ার্ডের চুনোপুটিদের ধরতাসেন। যারা সংসদে আছে, যে ডাকাত, চোররা আছে তাদের ধরেন না কেন? পাই পাই করে হিসেব নিতে হবে। নারায়ণগঞ্জের সিরাজসহ অনেকে এদেশের জন্য জীবন দিয়েছে।
২০১৪ সালে ভোট চুরি করেছে আর, ২০১৮ সালে ভোটা ডাকাতি করেছে। তখন মানুষকে ভোট দিতে দেননি আর এবার ভোট দেয়ার আগেই ব্যালট নিয়ে গেছেন। পুলিশ, র্যাব, আর্মি, প্রশাসন কর্মকর্তা, শিক্ষক সকলে এই ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। যে শিক্ষক টাকার বিনিময়ে ব্যালট পেপার কাটে তার পক্ষে শিক্ষা দেওয়া সম্ভব না। তার বিবেক হারিয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমি ৬০ বছর রাজনীতি করি। যে কোনো সময় আমার মৃত্যু হতে পারে। তবে মৃত্যুর আগে এই স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন দেখে যেতে চাই।
প্রধান মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর লাশ ২৪ ঘন্টা পড়ে ছিল। সেই লাশ দেখতে আওয়ামী লীগের কেউ যায়নি। মাছি পাহারা দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর চেয়ে বড় নেতা আপনি হননি। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যদি এই আচরণ হয়ে থাকে তাহলে আপনার সঙ্গে কি হবে চিন্তা করে দেখবেন। ভদ্রভাবে যদি ক্ষমতা থেকে না যান তাহলে আপনাকে বাধ্য করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর শাখার সভাপতি মোত্তালিব মাস্টারের সভাপতিত্বে ও ছাত্রলীগ (জেএসডি) এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী তৌফিকুজ্জামান তৌফিকের সঞ্চালনায় এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেএসডি’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া। আরো উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মিসেস তানিয়া রব, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক রাজা, প্রচার সম্পাদক এস.এম রানা চৌধুরী, ঢাকা উত্তর মহানগর শাখার আবুল মোবারক, নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি এড. খলিলুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাধারণ সম্পাদক হাসান আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আলা উদ্দিন প্রমুখ।